বগুড়ার ধুনটে বহুল আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও আলামত নষ্টের অভিযোগে ধুনট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা এবং কলেজ শিক্ষক মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকালে বগুড়ার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ চার্জশিট আমলে নিয়ে দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়ার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি হলেন:
১. মুরাদুজ্জামান মুকুল (৪৮): ধুনট উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রভাষক।
২. কৃপা সিন্ধু বালা (৫১): বর্তমানে গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কলেজ শিক্ষক মুকুল ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ধুনট পৌরসভার এক কলেজ শিক্ষক দম্পতির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করেন এবং সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা ওই বছরের ১২ মে ধুনট থানায় মামলা করেন।
তদন্তের সময় তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামি মুকুলকে গ্রেফতারের পর তার জব্দ করা মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পান। কিন্তু অভিযোগ ওঠে যে, তিনি আসামির কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ভিডিও দৃশ্যসহ কিছু আলামত নষ্ট করে ফেলেন।
মামলার বাদী পুলিশের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় এবং মামলাটি ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তদন্তের দায়িত্ব পায় বগুড়া পিবিআই।
এর আগে পিবিআইয়ের এসআই সবুজ আলী সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে বাঁচাতে তাকে বাদ দিয়ে মনগড়া চার্জশিট দাখিল করলে বাদী নারাজির আবেদন করেন। আদালত সম্পূরক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় মোট ছয় জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়।
অবশেষে বগুড়া পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম গত মঙ্গলবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তিনি জানান, সাক্ষ্য প্রমাণে মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ এবং সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আলামত নষ্টের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
