Home বিনোদনলোকসানে বন্ধ হলো বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স, মালিকের অপেক্ষা ‘নির্বাচিত সরকারের’

লোকসানে বন্ধ হলো বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স, মালিকের অপেক্ষা ‘নির্বাচিত সরকারের’

by Akash
০ comments

দর্শক ও মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের অভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন হলটির মালিক আর এম ইউনুস রুবেল। তিনি জানান, দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সংকট এবং বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানির অনিশ্চয়তার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে তিনি আশাবাদী যে একটি নির্বাচিত সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আবার হলটি চালু করা যাবে।

আর এম ইউনুস রুবেল বলেন, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল এবং রক্ষণাবেক্ষণে প্রতি মাসে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। গত ঈদুল আজহায় শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ সিনেমার পর থেকে ভালো ছবি মুক্তি না পাওয়ায় দর্শকশূন্য হয়ে পড়ে হলটি। এতে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়েছে এবং কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। টানা লোকসানের কারণে বাধ্য হয়ে হল বন্ধের এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। রুবেল আরও জানান, তিনি নির্বাচিত সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন, কারণ তারা বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানির উদ্যোগ নিলে হলটি পুনরায় চালু হতে পারে।

একসময় বগুড়া জেলায় ৩৮টি সিনেমা হল ছিল, যার মধ্যে বর্তমানে টিকে আছে মাত্র ৭টি। শহরের ১০টি হলের মধ্যে শুধু মধুবন সিনেপ্লেক্স ও সোনিয়া হল চালু ছিল। মাধু, মেট্রো ও মেরিনা-এর মতো হলগুলো ভেঙে শপিং মল তৈরি হয়েছে, আর অন্যগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।

১৯৭৪ সালে রুবেলের বাবা এ এম ইউনুস প্রায় ২৪ শতক জমিতে মধুবন সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় প্রায় এক হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই হলে ‘ডাকু মনসুর’ দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুজন সখী’-এর মতো বহু দর্শকনন্দিত সিনেমা হাউসফুল চলেছে এই হলে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০০৬ সালে প্রথমবার বন্ধ হয় হলটি। ২০১৪ সালে পুনরায় চালু হওয়ার পর ২০২১ সালে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে এটি আধুনিকায়িত করে **মধুবন সিনেপ্লেক্স** নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করে।

আধুনিকায়নের পর মধুবন সিনেপ্লেক্স নতুন করে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’, ‘প্রিয়তমা’, ‘তুফান’, ‘রাজকুমার’ এবং ‘বরবাদ’-এর মতো ছবিগুলো ব্যাপক ব্যবসা করে। এমনকি হিন্দি ছবি ‘জওয়ান’ ও ‘পাঠান’-ও সফল হয়। সর্বশেষ ‘তাণ্ডব’ সিনেমার জন্য মধ্যরাতেও শো চালাতে হয়েছে। কিন্তু এরপর ভালো ছবি মুক্তি না পাওয়ায় হলটির ব্যবসায়িক ছন্দপতন ঘটে। রুবেল বলেন, বাংলা ডাবিং করা বিদেশি সিনেমা চালানোর সুযোগ পেলে দর্শক ফিরে আসত।

তিনি সিনেমা শিল্পকে বাঁচাতে কার্যকর নীতিমালা এবং সরকারি সহায়তার আহ্বান জানান। তার আশা, সিনেমা আমদানি ও প্রদর্শনের সুযোগ বাড়লে একদিন মধুবন সিনেপ্লেক্স আবার তার পুরনো জৌলুস ফিরে পাবে।

You may also like

Leave a Comment