পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিনটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে আরও ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য শেষে আগামী ২৯ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছে আদালত।
সাক্ষ্য দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন—প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, রাজউকের উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক জাকির হোসেন এবং সাব-রেজিস্টার মাহবুবুর রহমান ও জাহিদুর রহমান। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার সোহানুর রহমান জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার মামলায় পাঁচজন, পুতুলের মামলায় পাঁচজন এবং জয়ের মামলায় দুইজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই পাঁচজন সাক্ষী ঘুরেফিরে তিন মামলায় মোট ১২ জনের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তবে, আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরা করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে এসব মামলায় বিভিন্ন দিনে আরও সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। গত ৩১ জুলাই পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে। শেখ পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন—শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।
শেখ পরিবার ছাড়া মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন-সহ মোট ২৩ জন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে দুদক এই ছয়টি মামলা করে, যার সবকটিতেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, “সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।” শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।