নেপালের সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রীও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তবে সেখানকার ছাত্রসমাজ রাজনৈতিক দলে না গিয়ে পড়াশোনার টেবিলে ফিরে গেছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, “নেপালের আজকের এই অসন্তোষের পেছনে অন্যতম কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া। তবে এর বাইরে ‘হামি নেপাল’ নামের একটি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়েছে—যেখানে দেখানো হয়েছে নেপালের রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসী জীবনযাপন করছে, বিদেশে পড়াশোনা করছে, বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ নেপালি তরুণরা শ্রমিক হয়ে বিদেশে কাজ করছে। এই বৈষম্যই অভ্যুত্থানের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মতোই নেপালেও রাজনৈতিক পরিবারগুলোর সন্তানরা বিলাসিতায় অভ্যস্ত। আর সাধারণ জনগণের সন্তানদের জীবনযাপন একেবারেই ভিন্ন। এই অসাম্যই সামাজিক মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে অভ্যুত্থান ঘটাতে তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করেছে।”
অভ্যুত্থানের পর নেপালের পরিস্থিতি বাংলাদেশের থেকে আলাদা ছিল বলে মন্তব্য করেন রুমিন। তিনি বলেন, “যখন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দায়িত্ব নিলেন, তখন তিনি প্রথমেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তিনি কোথাও যাননি যেখানে তাকে নিয়ে ‘পাঁচ বছর, পাঁচ বছর’ ধ্বনি উঠেছে, কিংবা কেউ ফেসবুকে লিখেছে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে দেখতে চাই। তিনি দায়িত্ব পালন শেষে আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন। কোনো লোভ, দ্বিধা বা ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার প্রবণতা দেখা যায়নি।”
রুমিন ফারহানা দাবি করেন, নেপালের তরুণরাও অভ্যুত্থানের পর রাজনীতি করতে ঝুঁকে পড়েনি, বরং আবার পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেছে। “তারা কোনো দল করতে বসেনি। তারা জানে, তাদের ভূমিকা সীমিত ছিল এবং সেটুকুই তারা করেছে,” বলেন তিনি।
