গাজায় দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে ইসরায়েল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, কূটনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এমনকি খেলাধুলার অঙ্গনেও দেশটির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া বাড়ছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দখলদারিত্বের ঘোষণা, গাজায় স্থল আক্রমণ এবং হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর জাতিসংঘের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছে। যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এই সংকটের প্রভাব অর্থনৈতিকভাবেও দেখা যাচ্ছে। ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আংশিকভাবে স্থগিতের প্রস্তাব দিয়েছে। নরওয়ের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল ইসরায়েলে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন যে দেশটি এক ধরনের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার মুখে পড়েছে।
সংস্কৃতি ও খেলাধুলায়ও ইসরায়েল বয়কটের শিকার হচ্ছে। আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও স্পেনসহ কয়েকটি দেশ ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গান প্রতিযোগিতা বর্জনের হুমকি দিয়েছে, যদি ইসরায়েলকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়া, বেলজিয়ামের একটি সংগীত উৎসবে ইসরায়েলি কন্ডাক্টরকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং হলিউডের হাজারো চলচ্চিত্রকর্মী ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। খেলার মাঠেও ইসরায়েলি খেলোয়াড়দের জাতীয় পতাকার অধীনে খেলার অনুমতি না দেওয়ায় তারা একটি দাবার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদেও (ইউএনজিএ) ইসরায়েলের বিচ্ছিন্নতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক অধিবেশনে কানাডা, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় তার আন্তর্জাতিক সফরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে এসবের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সমর্থক হিসেবে রয়েছে।
